এনালাইসিস (বিশ্লেষণ) যে কোন ক্যারিয়ার গঠনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, আপনি যদি ট্রেডিং এ ক্যারিয়ার গঠনে আগ্রহী হন তাহলে আপনাকে অবশ্যই এনালাইসিস সম্বন্ধে জানতে হবে এবং করতে হবে। এনালাইসিস এর জন্য প্রয়োজন হয় তথ্য, আপনি যে কাজ শুরু করছেন তার সাথে জড়িত এবং সেই কাজকে প্রভাবিত করতে পারে এমন সকল তথ্যগুলো সম্পর্কে জ্ঞান আপনাকে বর্তমানে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে এবং একই সময় যে কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায়ও আপনাকে এগিয়ে রাখবে। তাই আপনি যে কোন সেক্টর এ অর্থপূর্ণ সফলতার জন্য আপনাকে এনালাইসিস করতে হবে।
ট্রেডিং এ এনালাইসিস এর প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যকীয় , ট্রেডিং ক্যারিয়ার এর প্রথম দিন থেকেই আপনি মূলত প্রতিযোগিতায় নামছেন এমন ট্রেডারগন এর সাথে যারা মার্কেট এর তথ্য জেনে তা পর্যালোচনা করার ক্ষেত্রেও পরিপক্ক, এবং তারা আপনাকে কোন ছাড় দিবেনা, আপনাকে এই দক্ষ ট্রেডারগন এর সাথে ট্রেড করে সফল হতে প্রয়োজন জ্ঞান অর্জন করা। মার্কেট সম্পর্কে সকল ধরনের তথ্য জানতে হবে, জেনে তা পর্যালোচনা করতে হবে, যা আপনাকে অন্য ট্রেডারদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখবে। যার সাথে আপনার কিছু ব্যক্তিগত গুনাবলীর সমন্বয়েই আপনি হয়ে উঠবেন সফল ট্রেডার।
ট্রেডিং ক্যরিয়ারএ যে তথ্যগুলো সম্পর্কে একজন ট্রেডারকে জানতে হয় এবং তা নিয়ে এনালাইসিস করতে হয়, সে সকল তথ্যগুলো তিনটি ক্যটাগরিতে পড়েঃ
০১. ফান্ডামেন্টাল অর্থাৎ মৌলিক তথ্যাবলি
০২. টেকনিক্যাল অর্থাৎ প্রক্রিয়াজাত তথ্যাবলী
০৩. সেন্টিমেন্ট অর্থাৎ মানসিকতা সংক্রান্ত তথ্যাবলী
এই তিনটি ক্যাটাগরির এনালাইসিস এর জন্য তিন ধরনের তথ্য সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা প্রয়োজন। আপনি যদি শেয়ার মার্কেট এ ট্রেডিং করেন তাহলে আপনাকে যে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে তা হচ্ছে, আপনি কোন কোন শেয়ার ট্রেড করতে আগ্রহী তা বাছাই করতে হবে, তারপর সেই শেয়ারগুলো যে কোম্পানীর তাদের সম্পর্কে সকল তথ্য সংগ্রহ, তাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে হবে, তারপর তাদের প্রাইজ চার্ট থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে তা হল সেই শেয়ার এর ভলিউম, ট্রেন্ড, গুরুত্বপূর্ন টার্নিং পয়েন্ট ইত্যাদি, অবশেষে বুঝতে হবে সেই শেয়ার এবং কোম্পানি সম্পর্কে ট্রেডারদের মানসিক অবস্থা।
তেমনিভাবে ফরেক্সএর ক্ষেত্রে আপনি যে কারেন্সি পেয়ার এর ট্রেড করতে আপনি আগ্রহী সেই কারেন্সি যে দেশের , সেই দেশ সম্পর্কে ধারণা রাখা, তাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, তাদের চার্ট এনালাইসিস, সেই কারেন্সির বর্তমান ট্রেন্ড কি, তার গুরুত্বপূর্ন সাপ্লাই এবং ডিমান্ড জোনগুলো সম্পর্কে ধারণা লাভ, তার ট্রেডিং ভলিউম ইত্যাদি সকল তথ্য, এবং সর্বোপরি।
নিম্নে তিন ধরনের এনালাইসিস এর সংক্ষিপ ধারনা দেয়া হল পরবর্তী আর্টিকেলগুলোতে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস
একটি শেয়ার অথবা কারেন্সির একেবারে মূল যে তথ্যগুলো রয়েছে, যার মধ্যে তাদের ইতিহাস, তাদের শক্তিমত্তা এবং দুর্বলতা, সে ফ্যাক্টরগুলো শেয়ার এবং কারেন্সির প্রাইজ এর পরিবর্তনে সবচেয়ে অধিক ভূমিকা রাখে সে তথ্যগুলো ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর ক্যাটাগরিতে পড়ে। যেমন শেয়ার এর ক্ষেত্রে কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা , কারেন্সির ক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট রেট এর সিদ্বান্ত অনেক বিশাল ভূমিকা রাখে যার প্রভাব সারা বছর ধরেই থাকে।
টেকনিক্যাল এনালাইসিস
একটি শেয়ার অথবা কারেন্সির চার্ট এ প্রাইজ এর যে মুবমেন্ট হয় তার পর্যালোচনা ভিত্তিই হল এই এনালাইসিস এর মূলে রয়েছে। আমাদের মধ্যে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে ” ইতিহাস বারবার পুনরাবৃত্তি হয়” এই একই কথা প্রাইজ চার্টেও লক্ষ্য করা যায়। এ বছর যে প্রাইজএ মার্কেট রয়েছে তার পরের বছর বা তার পরের বছর সেই প্রাইজ মার্কেট পুনরায় আসার সম্ভাবনা থাকে এবং এভাবেই কোন শেয়ার বা কারেন্সির প্রাইজ কিছু জোন তৈরি করে যেখান থেকে প্রাইজ বারবার আবর্তিত হতে লক্ষ্য করা যায় এই পর্যালোচনা গুলোর সমন্বয়েই টেকনিক্যাল এনালাইসিস।
সেন্টিমেন্ট এনালাইসিস
এই সকল বিষয় গুলো সম্মিলিতভাবে সামষ্টিক মানসিকতা তৈরি করে, যে মানসিকতা বা সেন্টিমেন্টই মার্কেট মুবমেন্ট এর মূল কারন, কারন অনেক সময় ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এবং টেকনিক্যাল এনালাইসিস নেতিবাচক থাকলেও কোন শেয়ার বা কারেন্সির প্রাইজ এর পরিবর্তন হয় ইতিবাচক এর মূল কারন হল সামষ্টিক যে সেন্টিম্যান্ট তা ওই কারেন্সির পক্ষে। তাই সেন্টিমেন্ট এনালাইসিসও প্রাইজ মুবমেন্টএ অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
এই তিনটি এনালাইসিস এর মাধ্যমেই একজন ট্রেডারকে সফল ক্যারিয়ার গঠন করতে হয়। আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলগুলোতে আমরা শুধু জানবোই না, কিভাবে এই এনালাইসিস গুলো করতে হয় তাও দেখবো।