আমরা যত বড় হতে থাকি আমাদের দ্বায়িত্বও বাড়তে থাকে, দ্বায়িত্ব অনেক সময় আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়, আবার অনেক সময় আমরা নিজেরা ইচ্ছে করে নিয়ে নেই। কিন্তু যেভাবেই আসুক আপনি যখন কোন দ্বায়িত্ব নেন তার অর্থ হলো আপনি দায়িত্ব নেয়ার জন্য যোগ্য।
যেভাবেই দ্বায়িত্ব আসুক, যখনি আসবে তখন আমাদের কাজ হচ্ছে প্রথমে তা চাপ মনে না করে তার প্রকৃতি সম্পর্কে বুঝার প্রচেষ্টায় রত হওয়া, দ্বায়িত্ব মানে চাপ নয় বরঞ্চ কিছু কাজ সম্পন্ন করার মাধ্যমে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যম। নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে নেয়ার মাধ্যম, বা নিজেকে “better version of yourself”.নিজেরই উন্নত সংস্করণ তৈরি করার মাধ্যম।
এই দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে যেহেতু কিছু অতিরিক্ত কাজ করতে হয় তাই ভূল ও হতে পারে এই ভূল এর দ্বায় এড়ানো আমাদের মানুষের সাধারণ প্রবনতা, আমরা আমাদের উপর কোন দায় নিয়ে চাই না। কিন্তু সফল হতে হলে এই ভুলগুলোর দ্বায়িত্ব নিতে হবে।
যখনই কেউ কোন ভুল করে আর দায় এড়াতে চায় সে তখন তা অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার অপেক্ষায় থাকে বা সূযোগ খুজতে থাকে। যার ফলে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন যে বিষয় তার দিকে লক্ষ্যস্থির না করে লক্ষ্য অন্য দিকে করে যার ফলে তার কোন পরিবর্তন সম্ভব হয় না বরঞ্চ তার চারিত্রিক অবনতি ঘটায়।
যা প্রয়োজন তা হল ভূল এর দিকে লক্ষ্য রেখে তা কেন হলো তার কারন উৎঘাটন করা, এবং তারপর তার সমাধানে প্রচেষ্টা করা উচিত। যাতে করে পরবর্তীতে এই ধরনের ভূল না হয় বা হলেও দ্রুত সমাধান করার লক্ষ্যে কাজ করা যায়। এভাবে করে ট্রিট করতে পারলে প্রতিটি ভুল থেকেই আমরা শিখবো এটি আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। যা আমাদের একধাপ একধাপ করে এগিয়ে নিয়ে আমাদের অভিষ্ঠ লক্ষ্যে।
ট্রেডিং টেবিল এ এই গুন রপ্ত করা অত্যন্ত জরুরী কারন আপনার লস করা ট্রেড দায় যদি এড়াতে চান তাহলে আপনি কার উপর আপনার ট্রেডিং এর দ্বায়িত্ব চাপাবেন? মার্কেট এর উপর, নাকি কোন নিউজ ইভেন্ট এর উপর।
দ্বায়িত্ব নেয়া খুব সহজ কাজ নয় এটা আমরা জানি

আমরা যে সমাজে বাস করি সেখানে বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় যে ভূল হতেই পারে তা মেনে নেয়ায় আমাদের রয়েছে নাকসিটকানো ভাব। আমরা ছোট বেলা থেকে যা শিখেছি তা হলো ভূল হলেই তা উপহাসের বিষয়, তাই ভূল করতে বা ভূল হবে বলে আমরা আতংকে থাকি। উপহাস করা কখনোই একজন শিশুকে কোন কাজের দ্বায়িত্ব নেয়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারে না।
দায়িত্ব গ্রহণ করা স্ব-স্বীকৃতির একটি অংশ। স্ব-স্বীকৃতির পরিমাপ করতে, আপনি যখন কোন ভূল করেন তখন আপনি আপনার বিষয়ে কতটা ইতিবাচক বা নেতিবাচকভাব তা জানতে হবে।
ভূল করার পর আপনি যতটা নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করবেন ততই আপনার দ্বায়িত্ব এড়ানোর সম্ভাবনা বাড়বে, যাতে করে আপনাকে কোন ভূল এর ফলে উপহাস সহ্য করা লাগে, বা লজ্জা থেকে বা কোন বকা না সহ্য করতে হয়। অন্যদিকে যদি আপনার স্ব-স্বীকৃতির, ভূল করার পরও যদি নিজের প্রতি ইতিবাচক থাকতে পারেন, বা যতটা ইতিবাচক থাকতে পারেন, যত অধিক ইতিবাচক থাকবেন ততই আপনি দ্বায়িত্ব নিতে আগ্রহী বা সাহসী হবেন কারন আপনি ভূল হলেও ভীত না হয়ে তা থেকে অভিজ্ঞতা অর্জনকেও গুরুত্ব সহকারে দেখেন।
সফল হওয়ার পথে মার্কেট একজন ট্রেডারকে ভিবিন্ন ভাবে চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন করবে, এবং প্রত্যেকবারই নতুন নতুন ভাবে।
আপনি কোন একটি ট্রেড দিয়ে এর সকল দ্বায়িত্ব মার্কেট এর উপর দিয়ে দিলে হবে না, এমনভাবে যেন মার্কেট আপনাকে টাকা দিয়ে দিবে।
মার্কেট তরল এর মত, সবসময় পরিবর্তনশীল যেখানে যেকোন সময় অন্য ট্রেডারগন যথেষ্ট শক্তি নিয়ে মার্কেট এ ট্রেড শুরু করতে পারে যখন মার্কেট ট্রেণ্ড সম্পূর্ণরুপে পরিবর্তিত হতে পারে, যা আপনার ট্রেড এর বিপরীত আপনি যখন নিয়েছিলেন সে সময় থেকে। এই চির চলমান মার্কেট এনভাইরনমেন্ট এ সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আপনাকে হতে হবে দ্বায়িত্ববোধ সম্পন্ন, না হয় আপনি কিভাবে শিখবেন ট্রেডিং কিভাবে করতে হবে, আপনি যদি মার্কেট দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আপনার নেয়া সিদ্ধান্তের চেয়ে এর অন্যের দ্বারা প্রাপ্ত তথ্যকে অধিক মূল্যায়ন করেন এই ভেবে যে এতে দায় এড়ানো যায়, তাহলে আপনার মনে হতেই পারে মার্কেট রহস্যময়, কারন আপনার নিজের ব্যবহারই রহস্যময়।
আপনি প্রতিনিয়ত এমন এক মানসিকতায় থাকবেন যেখানে, কনফিউশান, উদিগ্ন, আশংকাজনক, ভয় এই আবেগগুলো আপনাকে পরিচালিত করবে কারন আপনি নিজেই জানেন না যে পরবর্তীতে আপনি কি করবেন। যার ফলে আপনি হতাশাজনক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাবেন।
নিজেকে বুঝতে পারারই আরেক নাম মার্কেট এ উপলব্ধি করা করা কারন একজন ট্রেডার হিসেবে আপনিও সম্মিলিত শক্তি যা মার্কেট প্রাইজের এর মূল কারন।
যদি আপনি নিজের ভিতরের, আপনাকে পরিচালিত করার শক্তিগুলো যা আপনাকে প্রভাবিত করে তা না বুঝতে না পারেন, তাহলে কিভাবে গ্রুপ অফ ট্রেডারগন কি আবেগ দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন তা বুঝবেন এবং তা থেকে টাকা আয় করবেন।
যখনই আপনি আপনার অন্তরনিহিত শক্তিগুলো বুঝতে পারবেন যা আপনার কার্যাবলীর নিয়ন্ত্রণ করে এবং আপনি দ্বায়িত্ব নিতে শিখবেন আপনি যা করেছেন, এবং করেননি, আপনি কি করতে পারেন এবং পারেন না, কি কি আপনি করতে পারেন এবং কি করতে পারেন না, তা উপলব্ধি করতে পারলেই আপনি বুঝতে, উপলব্ধি, এবং অনুভব করতে পারবে কি সে শক্তি যা একজন ট্রেডার বা একাধিক ট্রেডারকে কোন ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিতে বা না নিতে প্রেরণা যোগায়।
যখনই আপনি আপনার আবেগ এর উপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন, তখন আপনি লক্ষ্য করবেন কিভাবে অন্য ট্রেডারগন তাদের সাথে যা ঘটে তার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন না, যেমন নৌকার পাল বাতাস যেদিকে যায় সেদিকেই নৌকাকে নিয়ে যায়, যেভাবে ধানের পাতা বাতাসের দিকে হেলতে দুলতে থাকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে।
যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিজেকে ভীড় থেকে আলাদা করতে না পারবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি তা দেখতেই পাবেন না। যখনই আপনি নিজেকে বুঝতে পারবেন তখন গ্রুপ এর অন্যদের মানসিকতা উপলব্ধি করা খুব কঠিন হবে না, যা আপনাকে পরবর্তী সিদ্ধান্তে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।
গ্রুপ এর সবাইকে আপনি ততটাই বুঝতে পারবেন আপনি নিজেকে যতটা বুঝতে পারেন।
নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলার পথে যে নিয়মানুবর্তিতা এবং ধারণা গুলো অনুসরণ করা প্রয়োজন, তা মূলত স্থায়ী সফলতার পথে প্রথম পদক্ষেপ।
আপনি তাদের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারেন এবং প্রতিষ্ঠিত করতেও পারেন কিন্তু আপনি অনেক সময়ই হতাশ হয়ে যাবেন যখন দেখবেন সেগুলো মেনে চলা কতটা জটিল।