সাধারণত ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট লেভেল হল কিছু হরাইজোন্টাল লাইন( অনুভূমিক রেখা) যা ইংগিত প্রদান করে যে কোথায় প্রাইজ এর সম্ভাব্য রিট্রেসমেন্ট সংগঠিত হতে পারে। ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স এরিয়া সম্পর্কে ট্রেডার এবং বিনিয়োগকারীদের স্পষ্ট ধারণা প্রদান করে। ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলো একক শতকরা আকারে প্রকাশ করা হয়। এই শতকরা পয়েন্ট গুলো নির্দেশ করে যে প্রাইজ পূর্বের যে ট্রেন্ড বা প্রাইজ রেঞ্জ ছিল তার তুলনায় বর্তমান মার্কেট প্রাইজ এ কতটা রিট্রেস হয়েছে। এই ফিবোনাচি নাম্বার গুলোর মধ্যে রয়েছে ২৩.৬%, ৩৮.২%, ৫০%, ৬১.৮%, এবং ৭৮.৬%। এর মধ্যে যদিও ৫০% ফিবোনাচি রেশিও নয় তারপরও এর গুরুত্বের ফলে এটিও ব্যবহৃত হয়।
প্রায় সকল ট্রেডিং প্রাটফর্মেই ফিবোনাচি ইন্ডিকেটর প্রদান করে যা শেয়ার, কারেন্সি পেয়ার অথবা কোন কমোডিটির সম্ভাব্য রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলোর ধারণা দেয়। ফিবোনাচি ইন্ডিকেটর বিভিন্নভাবে আকা যায়, যেমন একটি রিসেন্ট ট্রেন্ড এর সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন দুটি প্রাইজ পয়েন্ট এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।
চার্টে ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট লেভেল
আপনার ট্রেডিং চার্টে লেভেলগুলো আঁকতে প্রথমে আপনাকে প্রাইজ এর সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন পয়েন্ট খুজে বের করতে হবে। তারপর যদি ডাউনট্রেন্ড হয় তাহলে সর্বোচ্চ প্রাইজ থেকে মাউস দিয়ে ক্লিক করে তা সর্বনিম্ন প্রাইজ এ টেনে আনতে হবে। আর যদি আপট্রেন্ড হয় তাহলে সর্বনিম্ন প্রাইজ এ পয়েন্টারটি দিয়ে ক্লিক করে তা সর্বোচ্চ প্রাইজ এ টেনে তুলতে হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন, আরও কিছু উদাহরণ এর মাধ্যমে স্পষ্ট করছি।
আপট্রেন্ড এ ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট
নিচে EUR/USD এর ডেইলি চার্ট।

এখানে আমরা ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট লেভেল চার্টে আঁকতে প্রথমে ক্লিক করেছি সাম্প্রতিক সময়ের সর্বনিম্ন প্রাইজ ১.১৯৫২, যা ছিল ফেব্রুয়ারী ৫ তারিখ ২০২১ এবং তারপর তা টেনে নিয়েছি সর্বোচ্চ প্রাইজ ১.২১৬৯ এ যা ছিল ফেব্রুয়ারী ১৬ তারিখ ২০২১। ট্রেডিং প্লাটফর্ম মেটাট্রেডার সয়ংক্রিয়ভাবে হিসেব করে রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলো দেখাচ্ছে।
চার্টে দেখাচ্ছে লেভেলগুলো ২৩.৬% ( ১.২১১৮), ৩৮.২% ( ১.২০৮৬), ৫০% ( ১.২০৬০), ৬১.৮%( ১.২০৩৫) এবং ৭৬.৪% ( ১.২০০৫)
এখন ট্রেডারগন প্রত্যাশা করবেন যে যদি প্রাইজ সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ প্রাইজ থেকে রিট্রেস করে তাহলে তা এই ফিবোনাচি লেভেল গুলোর যে কোন একটিকে সাপোর্ট হিসেবে খুজে পাবে কারন ট্রেডাররা এই লেভেলগুলো থেকেই আবার পুলব্যাল এর সময় ট্রেড নিবেন। চলুন দেখা যাক যখন প্রাইজ সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ প্রাইজ এ পৌছায়,

উপরের চার্টে আমরা দেখতে পাই প্রাইজ ৬১.৮% থেকে রিট্রেস করে ২০০ পিপস এর মতো রেলী করেছে। প্রাইজ যদিও ৬১.৮% লেভেলকে টেস্ট করেছে কিন্তু সেটি ব্রেক করে যেতে পারেনি।
ডাউনট্রেন্ড এ ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট
এখন চলুন দেখা নেয়া যাক আপট্রেন্ড এ ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট নিচে ডেইলী চার্টে USD/CAD

যেখানে সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ প্রাইজ ১.৩৩৮৯ যা ছিল অক্টোবর ২৯, ২০২০ এবং সর্বনিম্ন প্রাইজ ১.২৬৮৮ যা ছিল ডিসেম্বর ১৫, ২০২০।
রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলো হল ২৩.৬% ( ১.২৮৪৯), ৩৮.২% ( ১.২৯৫৪), ৫০%( ১.৩০৩৭), ৬১.৮ ( ১.৩১১৯), এবং ৭৬.৪%( ১.৩২২২)।
অর্থাৎ ট্রেডার গন এই লেভেল গুলো থেকে প্রাইজ রিট্রেসমেন্ট এর পর ট্রেড প্লেস করবে যাতে করে যখন আবার ট্রেন্ড কন্টিনিউ করবে যাতে করে সর্বোচ্চ লাভ করা যায়৷ চলুন দেখি তারপর কি হল।

প্রাইজ প্রথমে ৩৮.২ লেভেল থেকে রিট্রেস করলো শুধুমাত্র স্পর্শ করেই চলমান ট্রেন্ড এর দিকে যাত্রা করলো এবং তারপর আবার ফেব্রুয়ারী ২০২১ এ ২৩.৬ লেভেল এ হোল্ড করে ট্রেন্ড এর দিকে যেতে থাকলো এরপর সে ট্রেন্ড চলমান থাকলো মে ২০২১ পর্যন্ত। তারমানে লংটার্ম প্রফিট করা যেতো তাই নয় কি?
উপরের দুটি উদাহরণ থেকে দেখা যায় যে ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলো সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স হিসেবে ভূমিকা পালন করে, যেহেতু ট্রেডাররা তাদের চার্টে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স খুজতে ফিবোনাচি টুলস এর ব্যবহার করে এবং তারা এই লেভেল গুলোতে ট্রেড প্লেস করে তাই এগুলো কাজ করে।
যখনই কোন প্রাইজ লেভেলকে তুলনামূলক অধিক মার্কেট অংশগ্রহণকারীগন মনে করবেন যে এই লেভেল থেকে প্রাইজ এ সম্ভাব্য রিট্রেসমেন্ট হতে পারে এবং সে অনুযায়ী ট্রেড প্লেস করবেন সে লেভেল থেকে প্রাইজ রিট্রেস করবে। সকল টুলস এর মতো এটিও সবসময় নিশ্চিত ট্রেড এর সম্ভাবনা দেয় না। তবে আপনি আপনার ট্রেডিং সিদ্বান্তে এর ব্যবহার এর মাধ্যমে সুবিধা নিতে পারেন।